অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতি
Constitution of the Association for
Correction and Rehabilitation of Offenders)
অপরাধ একটি সামাজিক ব্যাধি। এটা সমাজ ও আইনের চোখে অন্যায়। তাই উন্নত দেশসমূহে অপরাধীদের বিচার করে তাদের শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি প্রবেশনের মাধ্যমে সেোশাধনের বিধান রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে শাস্তি অপরাধ প্রতিরোধে সহায়ক না হয়ে অপরাধ বিস্তারে সহায়ক হয়। শাস্তি নয়, সংশোধনই এ কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য। তাই আধুনিক চিন্তাবিদ ও সমাজবিজ্ঞানীগণ অপরাধীদের শাস্তির পরিবর্তে গঠনমূলক সংশোধনীর পক্ষে মত প্রকাশ করেন। এ ধ্যান ধারনার উপর ভিত্তি করেই প্রবেশন কার্যক্রমের উৎপত্তি হয়েছে। যারা প্রথম বারের মত অপরাধ করে এবং যাদের লঘুদন্ডে দন্ডিত করা হয়, সে সকল অপরাধীর শাস্তি স্থগিত রেখে প্রবেশন কর্মকর্তার আওতায় এনে তাদের চরিত্র সংশোধনের মাধ্যমে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা হয়ে থাকে। এছাড়া বিচারাধীন আসামী যারা আইনী সহায়তা গ্রহণে অক্ষম তাদের আইনী সহায়তা প্রদান, নিরাপদ হেফাজতীদের নিরাপত্তাসহ সকল প্রকার সহায়তা প্রদান, সাজা প্রাপ্ত জেল কয়েদীদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ শেষে সমাজে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করাই এ সমিতির মূল লক্ষ্য।
১৯৬০ সালে প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স জারীর (১৯৬৪ সালে সংশোধিত) মধ্য দিয়েই এ দেশে এ কার্যক্রম শুরু হয়। সরকারী উদ্যোগের সাথে বেসরকারী উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে প্রত্যেক জেলায় প্রবেশন কার্যক্রমকে ভিত্তি করে ১৯৬২ সালে “অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতি” প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ প্রেক্ষিতে ভোলা জেলায় সমিতি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যা নিম্নরুপঃ
সমিতির নাম : অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতি (Association for
Correction and Rehabilitation of Offenders)
ঠিকানা : প্রবেশন কার্যালয়, ভোলা।
সমিতির কার্য এলাকা : সমগ্র ভোলা জেলা।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যাবলী :
ক) সামাজিক ও মনস্তাত্বিক চিকিৎসার মাধ্যমে অর্থাৎ অপরাধের মূল কারণ সমূহ নির্ণয়পূর্রবক অপরাধীর সংশোধনের
ব্যবস্থা করা।
খ) অপরাধীদের সংশোধনের জন্য সকল প্রকার সহায়তা প্রদান করা।
গ) অপরাধীদের পিতা/মাতা এবং অন্যান্য আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীদের মন হতে তাদের প্রতি বিরুপ মনোভাব দূর
করে সহানুভূতিশীল হওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ।
ঘ) সভা, আলোচনা, সেমিনার ইত্যাদির মাধ্যমে অপরাধের কারণ নির্ণয় ও অপরাধের প্রতি প্রচলিত সামাজিক দৃষ্টি ভঙ্গি
পরিবর্তনের প্রচেষ্টা গ্রহণ।
ঙ) সংশোধনের পর অপরাধীকে সমাজে পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান।
চ) অপরাধীদের বিভিন্ন প্রকারের প্রশিক্ষণ কাজে নিয়োজিত করে আত্ম-কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে উপযোগী করে গড়ে তোলা।
ছ) আর্থিক অসচ্ছলতার দরুন যে সকল অপরাধী আদালতে জামিন লাভ বা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ হতে বঞ্চিত তাদের
আইনগত সহায়তা প্রদান করা।
জ) প্রবেশনে মুক্তিপ্রাপ্ত অপরাধীকে পুনর্বাসন সমিতি হতে এককালীন অনুদান বা সুদমুক্ত ঋণ দিয়ে তার আত্ম-সামাজিক
উন্নয়নে সহায়তা করা।
ঝ) কারাগারে অবস্থানরত অপরাধীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন ও পরিবারের সাথে অপরাধীর সুসম্পর্ক স্থাপনে
সহায়তা দান, যাতে করে মুক্তির পর তার পরিবারে ফিরে যাবার গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি হয়।
ঞ) কারাগারে অবস্থানরত অপরাধীদের জন্য কারা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় সাধারণ শিক্ষা, ধর্মীয় শিক্ষা, নৈতিক শিক্ষাসহ
যুগোপযোগী বৃত্তিমুলক প্রশিক্ষণ, কর্মসূচী গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা।
ট) অপরাধীদের কল্যাণে নিয়োজিত বিভিন্ন সংস্থা্/ প্রতিষ্ঠানের সহিত যোগাযোগ এবং কাজের সমন্বয় সাধন।
ঠ) সংবাদ পত্র, রেডিও, টেলিভিশন প্রভৃতির মাধ্যমে প্রচার এবং অপরাধের পরিনতি সম্পর্কে অপরাধীসহ সকলকে
সচেতন করা।
সদস্যঃ
১ সদস্য হওয়ার যোগ্যতাঃ
কার্য এলাকায় বসবাসকারী কমপক্ষে ১৮ বছরের উর্দ্ধে বয়স্ক যে কোন পুরুষ/মহিলা যিনি অপরাধীর কল্যাণ সাধনে আগ্রহী এবং সমিতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে বিশ্বাসী তিনি অত্র সমিতির সদস্য পদ লাভের আবেদন করতে পারবেন। আবেদন পত্র কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় অনুমোদিত হলে নির্ধারিত ভর্তি ফি ও চাঁদা প্রদান করে সদস্য পদ লাভ করা যাবে।
সদস্যদের শ্রেণী বিভাগঃ
এ সমিতিতে দুই প্রকার সদস্য রয়েছে।
ক) সাধারণ সদস্য
খ) আজীবন সদস্য
সদস্যদের ভর্তি ফি ও সদস্য চাঁদাঃ
সাধারণ সদস্যঃ সাধারণ সদস্য পদের জন্য ভর্তি ফি বাবদ ১০০/- (একশত) টাকা এবং বার্ষিক চাঁদার পরিমান ১২০/- (একশত বিশ) টাকা। সময়ের সাথে সংগতি রেখে কার্যনির্বাহী পরিষদ প্রয়োজনবোধে সাধারণ সদস্য ও আজীবন সদস্য চাঁদার পরিমান পুণঃ নির্ধারণ করতে পারবে। সাধারণ সদস্যগণ কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্ধারিত পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাসহ ভোটিাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।
আজীবন সদস্যঃ সমিতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে বিশ্বাসী হয়ে যে কোন ব্যক্তি এককালীন ৩০০০/- (তিন হাজার) টাকা চাঁদা দিয়ে আজীবন সদস্য হতে পারবেন। সাধারণ সদস্যদের ন্যায় তাদের ভোটাধিকার থাকবে।
সাংগঠনিক কাঠামোঃ সংস্থার ২ (দুই) টি পরিষদ রয়েছে ।
ক) সাধারণ পরিষদ
খ) কার্যনির্বাহী পরিষদ
সমিতির কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য সাধারণ পরিষদ কর্তৃক প্রতি দুই বছরের জন্য ১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কার্যনির্বাহী পরিষদ রয়েছে ।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস